হাই বন্ধুরা, এই পোস্টের মাধ্যমের আমরা, পিঁয়াজ চাষ পদ্ধতি বা পিয়াজ চাষ করার উপায় নিয়ে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করব।
এই পোস্টের মাধ্যমের আমরা পিয়াজ বীজ উৎপাদনের সময়, উপযুক্ত প্রভাবক, পিয়াজ বীজ উৎপানের সঠিক নিয়ম সম্পকে জানতে পারব।
তাহলে চলুন জেনে জান পিয়াজ চাষ করার পদ্ধতি সম্পকে।
পিয়াজ সম্প্রকে কিছু তথ্য?
পিয়াজ একদিকে একটি মসলা এবং অপরদিকে একটি সবজিও বটে। পিয়াজের পাতা ও উঁটা ভিটামিন সি ও ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ। সাধারণত রবি মৌসুমে পিয়াজ চাষ করা হয়। এর জন্য উপযুক্ত তাপমাত্রা হলাে ১৫-২০° সে.। গাছ বৃদ্ধির প্রথম দিকে তাপমাত্রা কম থাকা ভালাে। কন্দের বৃদ্ধি ও পরিপক্কতা পর্যায়ে তাপমাত্রা কিছু বেশি এবং শুষ্ক বাতাস বেশ সহায়ক ভূমিকা পালন করে। পিয়াজের ফুল ধারনের জন্য নিম্ন তাপমাত্রা প্রয়ােজন। পিয়াজ বীজ উৎপাদনের জন্য কন্দ বা বাল্ব উৎপাদন করা হয় । সাধারণত কন্দ থেকে উৎপাদিত পিয়াজ পরবর্তী বছর বীজ হিসেবে ব্যবহার করা হয়। বর্তমানে বাংলাদেশে গ্রীষ্মকালেও পিয়াজের আবাদ শুরু হয়েছে।পিঁয়াজ চাষ পদ্ধতি বা পিয়াজ চাষ করার উপায়
পিয়াজ চাষ পদ্ধতি গুলো ধাপগুলাে নিচে বর্ণনা করা হল:
১। মাটি ও আবহাওয়া: পিঁয়াজ চাষ পদ্ধতি
দোআঁশ ও বেলে দোআঁশ মাটি পিয়াজ চাষের জন্য উত্তম। মাটি উর্বর এবং সেচ ও নিষ্কাশন সুবিধাযুক্ত হওয়া বাঞ্চনীয়। ১৫-২০° সে. তাপমাত্রা পিয়াজ চাষের জন্য উপযােগী। মাটির অম্লমান ৬.৫-৭.৫ পিয়াজ চাষের জন্য উত্তম।
২। জমি তৈরি: পিঁয়াজ চাষ পদ্ধতি
গভীর চাষ ও মই দিয়ে জমি তৈরি করতে হবে। বড় ঢেলা ভেঙ্গে সমতল ও আগাছামুক্ত করে নিতে হবে।মাটি ভালভাবে ঝুরঝুরে করে নিতে হবে যাতে পিয়াজের শিকড় ও কন্দের বৃদ্ধি ভাল হয়।
৩। বপন/রােপন পদ্ধতি ও সময়: পিঁয়াজ চাষ পদ্ধতি
সরাসরি জমিতে বীজ বুনে, কন্দ ও চারা রােপন করে পিয়াজ উৎপাদন করা হয়। বৃষ্টিপাতজনিত সমস্যা না থাকলে আগাম ফসলের জন্য সেপ্টেম্বর মাসে কন্দ রােপন করা যায়।
৪। বীজের পরিমাণ: পিঁয়াজ চাষ পদ্ধতি
কন্দের আকারভেদে হেক্টর প্রতি প্রায় ১.২-১.৫ টন কন্দের প্রয়ােজন।
৫। সার প্রয়ােগ: পিঁয়াজ চাষ পদ্ধতি
বীজ পিয়াজের জমিতে হেক্টরপ্রতি নিম্নরূপ হারে সার প্রয়ােগ করতে হবে।
সারের নাম ----------------------পরিমাণ
সারের নাম ----------------------পরিমাণ
ইউরিয়া ---------------------------২০০ কেজি
টি.এস.পি ------- -----------------১২৫ কেজি।
এমওপি-----------------------------২৮০ কেজি
জিপসাম---------------------------১০০ কেজি
জিংক সালফেট ------------------২০ কেজি।
গােবর----------------------৮-১০ টন।
ইউরিয়া ও এমওপি সারের অর্ধেকসহ অন্যান্য সার জমি তৈরির সময় মাটির সাথে ভালভাবে মিশিয়ে দিতে হবে। বাকি সার কন্দ রােপনের ২৫-৫০ দিন পর দিতে হবে।
ইউরিয়া ও এমওপি সারের অর্ধেকসহ অন্যান্য সার জমি তৈরির সময় মাটির সাথে ভালভাবে মিশিয়ে দিতে হবে। বাকি সার কন্দ রােপনের ২৫-৫০ দিন পর দিতে হবে।
৬। কন্দ নির্বাচন ও রােপন: পিঁয়াজ চাষ পদ্ধতি
প্রতি কেজিতে ৭০ থেকে ১০০ পেঁয়াজ ধরে এরূপ আকারের কন্দ বীজ পিঁয়াজ হিসেবে ব্যবহার করতে হবে। কন্দ থেকে কন্দের রােপন দূরত্ব হবে ১৫ সে.মি, এবং সারি থেকে সারির দূরত্ব হবে ৩০ সে.মি.।
৭। অন্তর্বর্তীকালীন পরিচর্যা: পিঁয়াজ চাষ পদ্ধতি
পিয়াজের জমিতে মাটির প্রয়ােজনীয় রস না থাকলে প্রতি ১০-১৫ দিন অন্তর পানি সেচ প্রয়ােজন, পিয়াজ জলাবদ্ধতা সহ্য করতে পারে না। সুতরাং পিয়াজের জমিতে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা থাকতে হবে।
জমি আগাছামুক্ত রাখা বাঞ্চনীয়, এমনভাবে আগাছা পরিষ্কার করতে হবে যাতে পিয়াজের শিকড় ক্ষতিগ্রস্থ না হয়।
জমি আগাছামুক্ত রাখা বাঞ্চনীয়, এমনভাবে আগাছা পরিষ্কার করতে হবে যাতে পিয়াজের শিকড় ক্ষতিগ্রস্থ না হয়।
৮। পােকমাকড় দমন: পিঁয়াজ চাষ পদ্ধতি
থ্রিপস ও জাব পােকা পিয়াজের পাতা ও কচি ডগার রস শুষে গাছের ক্ষতি করে। প্রতি ১০ লিটার পানিতে ২০ মিলিলিটার ম্যালাথিয়ন ৫৭ ইসি মিশিয়ে স্প্রে করে পােকা দমন করা যায়।
৯। রােগবালাই দমন: পিঁয়াজ চাষ পদ্ধতি
পিয়াজের রােগের মধ্যে গােড়াপচা ও অলটারনারিয়া লিফ ব্লাইট (পার্পল ব্লচ) প্রধান। গােড়াপচা রােগে গাছের গােড়া পচে যায়। এক্ষেত্রে ডাইথেন এম-৪৫ ২০ গ্রাম/১০লিটার প্রতি হেক্টরে স্প্রে করে ভাল ফল পাওয়া যায়। অলটারনারিয়া লিফ ব্লাইট হলে পাতায় লালচে রং এর ঠোসা দেখা যায়। পরে পাতা কালাে হয়ে পুড়ে যায়। এ রােগ দমনের জন্য রােভরাল ৫০ ডব্লিউপি (২০ গ্রাম ১০ লিটার, প্রতি হেক্টরে) স্প্রে করতে হবে।
১০। রােগিং: পিঁয়াজ চাষ পদ্ধতি
বীজ ক্ষেত থেকে রােগাক্রান্ত সন্দেহযুক্ত ও অন্য জাতের গাছ তুলে ফেলাকে রােগিং বলে। পিয়াজ বীজ উৎপাদনের ক্ষেত্রে এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ফুল আসার আগে, ফুল আসার সময় এবং ফল পরিপক্ক পর্যায়ে রােগিং করতে হয়।
১১। বীজ সংগ্রহ ও সংরক্ষণ: পিঁয়াজ চাষ পদ্ধতি
কন্দ রােপনের দুই থেকে আড়াই মাস পর পিয়াজ গাছে ফুল আসে এবং এর ৬-৭ সপ্তাহ পর
ফল পাকতে শুরু করে। ফল পেকে শুকিয়ে গেলে এবং কালাে রং ধারণ করলে তখন সেগুলােকে সংগ্রহ করতে হবে। একবারে সকল ফল পাকে না বিধায় ২-৩ বারে সংগ্রহ করতে হবে। ডাটার খানিক অংশ সহ ফলগুলাে তুলে ভালাে করে শুকিয়ে মাড়াই ও ঝাড়াই করে বীজ সংগ্রহ করা হয়। এরপর বীজগুলাে ভালভাবে শুকিয়ে বায়ুবন্ধ টিনে বা। পলিথিন ব্যাগে ভরে শুকনা জায়গায় সংরক্ষণ করতে হবে।
ফল পাকতে শুরু করে। ফল পেকে শুকিয়ে গেলে এবং কালাে রং ধারণ করলে তখন সেগুলােকে সংগ্রহ করতে হবে। একবারে সকল ফল পাকে না বিধায় ২-৩ বারে সংগ্রহ করতে হবে। ডাটার খানিক অংশ সহ ফলগুলাে তুলে ভালাে করে শুকিয়ে মাড়াই ও ঝাড়াই করে বীজ সংগ্রহ করা হয়। এরপর বীজগুলাে ভালভাবে শুকিয়ে বায়ুবন্ধ টিনে বা। পলিথিন ব্যাগে ভরে শুকনা জায়গায় সংরক্ষণ করতে হবে।
১২। ফলন : পিঁয়াজ চাষ পদ্ধতি
হেক্টরপ্রতি ফলন ৭০০-৮০০ কেজি হতে পারে।

