শিক্ষার্থীদের উন্নত স্বাস্থ্যসেবার ও বিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য কর্মসূচির জন্য যে বিষয়গুলো জানা প্রয়োজন।শিক্ষার্থীদের উন্নত স্বাস্থ্যসেবার ও বিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য কর্মসূচির জন্য যে বিষয়গুলাে জানা প্রয়োজন তা নিয়ে জানব ।
শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যসেবা ও স্বাস্থ্যকার্ড
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যারা শিক্ষা তথা জ্ঞান লাভের জন্য যায় তারা শিক্ষার্থী নামে পরিচিত। শিক্ষার্থীরা ছয় থেকে যােল বছর বয়স পর্যন্ত বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করে। বছরে ৭/৮ মাস, সপ্তাহের ছয়দিন এবং প্রতিদিন ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা পর্যন্ত তাদেরকে বিদ্যালয়ে অবস্থান করতে হয়। এ দেশ বা জাতির জন্য ভবিষ্যতে সুনাগরিক হিসেবে গড়ে উঠার জন্য তাদের বিদ্যালয়ে অবস্থানকালীন সময় খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশের জন্য তাদের স্বাস্থ্যের প্রতি বিশেষভাবে দৃষ্টি দেওয়া প্রয়ােজন। বিদ্যালয়ের পরিবেশ, আসবাবপত্র, শিক্ষার উপকরণ ইত্যাদি যদি তাদের স্বাস্থ্যের অনুকূল না হয় তাহলে তাদের শরীর ও মন সুস্থ ও সবল হয়ে গড়ে উঠবে না। মানসিক উন্নতি তথা নৈতিক চরিত্র গঠনের উপযুক্ত ক্ষেত্র হচ্ছে বিদ্যালয়। আদর্শ শিক্ষকের তত্ত্বাবধানে শিক্ষার্থীরা ধীরে ধীরে সৎ গুণাবলি অর্জন করতে সমর্থ হয়। তেমনি শারীরিক সুষম বিকাশের জন্য বিদ্যালয়ে স্বাস্থ্যকর পরিবেশ, যেমন – বিশুদ্ধ পানি, পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ মধ্যাহ্নকালীন টিফিন, স্বাস্থ্যসম্মত পায়খানা-প্রস্রাবখানা, পর্যাপ্ত আলাে-বাতাস প্রবেশ করে এমন শ্রেণিকক্ষ, উন্মুক্ত খেলার মাঠ, ফুল ও ফলের বাগান এমন ধরনের বিদ্যালয় হলাে স্বাস্থ্যসম্মত বিদ্যালয়।
শিক্ষার্থীদের উন্নত স্বাস্থ্যসেবার জন্য যা যা প্রয়োজন
শিক্ষার্থীদের উন্নত স্বাস্থ্যসেবার জন্য নিচের বিষয়গুলাের উপর গুরুত্ব দিতে হবে
ক. বিদ্যালয় : খােলামেলা জায়গা যেখানে চারদিক থেকে অবাধে আলাে-বাতাস প্রবেশ করতে পারে, শব্দ দুষণ থাকে না এবং সহজে যাতায়াত করা যায় এমন উঁচু স্থানে বিদ্যালয় এর অবস্থান হতে হবে।
খ. খেলার মাঠ : খেলাবিহীন শিক্ষার্থীর জীবন কল্পনা করা যায় না। বিদ্যালয় সংলগ্ন খেলার মাঠ থাকতে হবে। শিক্ষার্থীরা সারাবছর বিভিন্ন ধরনের খেলাধুলা এই মাঠে চর্চা করতে পারবে।
গ. স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটারি পায়খানা ও প্রস্রাবখানা : শ্রেণিকক্ষ থেকে কিছুটা দূরে স্বাস্থ্যসম্মত পায়খানা ও প্রস্রাবখানা এবং পর্যাপ্ত পানির ব্যবস্থা থাকতে হবে।
ঘ. বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ : বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা স্বাস্থ্যসেবার অন্যতম অনুষঙ্গ। শহরে সরবরাহকৃত পানি ফুটিয়ে পান করার ব্যবস্থা থাকতে হবে। গ্রামাঞ্চলে গভীর নলকূপের পানি বিশুদ্ধ, তাই তা পানযােগ্য। পুকুরের পানি হলে তা ব্যবহারের পূর্বে ফুটিয়ে নিতে হবে। . শ্রেণিকক্ষ, আসবাবপত্র : অস্বাস্থ্যকর না হয় সেদিকে লক্ষ রেখে প্রয়ােজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।
ঙ. শ্রেণিকক্ষ, আসবাবপত্র : অস্বাস্থ্যকর না হয় সেদিকে লক্ষ রেখে প্রয়ােজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। বিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য কার্যক্রম। বিদ্যালয় স্বাস্থ্য কার্যক্রম (School Health Programme) শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। শিক্ষার্থীরা গ্রীষ্ম, বর্ষা বা শীত ঋতুতে নানাবিধ রােগে আক্রান্ত হয়। পূর্ব থেকেই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করলে এসব রােগ থেকে সহজে আরােগ্য লাভ করা যায়। যদি বিদ্যালয়ে স্বাস্থ্য কার্যক্রম থাকে তাহলে শিক্ষার্থীরা এই কার্যক্রমের আওতায় সাধারণ রােগ থেকে মুক্ত থাকতে পারে।
বিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য কর্মসূচির উল্লেখযােগ্য বিষয়গুলাে কি কি?
শিক্ষার্থীদের নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা : শিক্ষার্থীদের নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা, প্রাথমিক চিকিৎসা ও বিদ্যালয়ের স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ বজায় রাখার জন্য প্রত্যেক বিদ্যালয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা থাকতে হবে। এজন্য একজন উপযুক্ত চিকিৎসক পরিদর্শক হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। জেলার সিভিল সার্জনের তত্ত্বাবধানে এসব পরিদর্শক নির্ধারিত দিনে নির্দিষ্ট বিদ্যালয়ে হাজির হয়ে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষাসহ বিভিন্ন রােগের চিকিৎসা করবেন। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিদ্যালয়ে স্বাস্থ্য পরিদর্শককে সর্বপ্রকার সহযােগিতা করবেন। স্বাস্থ্য পরিদর্শক প্রত্যেক শিক্ষার্থীর বয়স, ওজন, রক্তের গ্রুপ, রক্তের চাপ, নাড়ির গতি, দৈহিক গঠন, চোখ, কান, দাঁত, হৃৎপিণ্ড, ফুসফুস প্রভৃতি বিষয় পরীক্ষা করবেন এবং একটি কার্ডে তা লিখবেন। এই কার্ডকে শিক্ষার্থীর স্বাস্থ্য কার্ড বলে।
স্বাস্থ্য সেবাকেন্দ্র : স্বাস্থ্য কর্মসূচি যে সব বিদ্যালয়ে নেই সেখানে একজন শিক্ষককে কিছু সাধারণ প্রশিক্ষণ দিয়ে শিক্ষার্থীদের সাধারণ স্বাস্থ্য সমস্যার সমাধান করা যেতে পারে। শিক্ষার্থীর অসুস্থতা জটিল হলে নিকটস্থ স্বাস্থ্য সেবাকেন্দ্রের সহায়তা গ্রহণ করা যায় অথবা হাসপাতালে ভর্তির ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে। বর্তমানে বাংলাদেশে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, জেলা সদর | হাসপাতাল কিংবা বিশেষায়িত হাসপাতাল থেকে স্বাস্থ্য সেবা পাওয়ার ব্যবস্থা আছে।
স্বাস্থ্য সেবাকেন্দ্র : স্বাস্থ্য কর্মসূচি যে সব বিদ্যালয়ে নেই সেখানে একজন শিক্ষককে কিছু সাধারণ প্রশিক্ষণ দিয়ে শিক্ষার্থীদের সাধারণ স্বাস্থ্য সমস্যার সমাধান করা যেতে পারে। শিক্ষার্থীর অসুস্থতা জটিল হলে নিকটস্থ স্বাস্থ্য সেবাকেন্দ্রের সহায়তা গ্রহণ করা যায় অথবা হাসপাতালে ভর্তির ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে। বর্তমানে বাংলাদেশে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, জেলা সদর | হাসপাতাল কিংবা বিশেষায়িত হাসপাতাল থেকে স্বাস্থ্য সেবা পাওয়ার ব্যবস্থা আছে।

