স্বাস্থ্যবিজ্ঞান কি? স্বাস্থ্যবিজ্ঞান এর গুরুত্ব গুলো কি কি? (What is health science? What is the importance of health science?)
স্বাস্থ্যবিজ্ঞান পাঠের উদ্দেশ্য হচ্ছে স্বাস্থ্যনীতি সম্বন্ধে জ্ঞান লাভ করা। আবার স্বাস্থ্যনীতি মেনে চলার উদ্দেশ্য হলাে রােগ প্রতিরােধ করা। মানুষ যতই রােগের কারণ খুঁজে বের করতে সক্ষম হবে, ততই সে রােগ প্রতিরােধের উপায় জানতে ও প্রয়ােগ করতে পারবে। এর কারণ, অসুস্থতা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া এবং সুস্থ শরীরে দীর্ঘজীবন লাভ করা।
তাই সুস্থ শরীর ও দীর্ঘজীবন লাভের জন্য যা করা প্রয়ােজন তা আমরা স্বাস্থ্য বিজ্ঞান পাঠে জানতে পারি। স্বাস্থ্যই সকল সুখের মুল’- এই প্রবাদ বাক্যটির মর্ম অনুধাবন করতে হলে অর্থাৎ স্বাস্থ্যের ন্যায় মূল্যবান সম্পদ লাভ করতে হলে আমাদেরকে স্বাস্থ্যবিজ্ঞান সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করতে হবে। আমাদের স্বাস্থ্যের উপর পারিপার্শ্বিক ও সামাজিক অবস্থার প্রভাব রয়েছে।
অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ আমাদের স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে, সংক্রামক ব্যাধির রােগজীবাণু একের দেহ থেকে অন্যের দেহে সংক্রমণ ঘটায়। কীভাবে সংক্রামক রােগ, ছোঁয়াচে রােগের সংক্রমণ হয় এবং প্রতিরােধে করণীয় কী তা জানা প্রয়ােজন।
এর প্রতিরােধে করণীয় বিশুদ্ধ পানি পান, দূষিত বায়ু থেকে রক্ষা, পুষ্টিকর সুষম খাদ্য গ্রহণ, আলাে বাতাসময় গৃহে বাস, স্বাস্থ্যকর স্কুলগৃহ, নিরাপদ পথ চলা, হিস্রপশু বা পাগলা কুকুর ও শিয়ালের কামড় থেকে আত্মরক্ষা, মলমূত্র আবর্জনা দূরীকরণ প্রভৃতি স্বাস্থ্যকর সকল ব্যবস্থা সম্পর্কে স্বাস্থ্যবিজ্ঞান পাঠে আমরা বিশদভাবে অবহিত হই। স্বাস্থ্যবিজ্ঞান পাঠে আমরা স্বাস্থ্যনীতি সম্পর্কে জানতে পারি। স্বাস্থ্যনীতির অন্যতম মুখ্য উদ্দেশ্য হচ্ছে রােগ প্রতিরােধ করা।
রােগ প্রতিরােধ ও রােগের প্রতিকার স্বাস্থ্যনীতির অন্তর্ভুক্ত। তবে রােগভেদে রােগের প্রতিরােধ ও প্রতিরােধের ধরন ভিন্ন ভিন্ন হবে। কেবল কলেরা, যক্ষ্মা, বসন্ত, টাইফয়েড প্রভৃতি রােগের একই রকম প্রতিরােধ বা প্রতিকারের ব্যবস্থা হবে না। দূষিত বায়ু, পানি, পচা, বাসি ও খােলা খাবার, গৃহবর্জ্য ও মলমূত্র নিষ্কাশনের অব্যবস্থা, অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ এসব রােগ বিস্তারে সহায়তা করে।
এমনিভাবে উন্নত ব্যবস্থাপনার ও চিকিৎসা সুবিধা প্রদানের মাধ্যমে মা ও শিশু মৃত্যুর হার কমিয়ে আনা, দুর্ঘটনার প্রাথমিক প্রতিবিধান নিশ্চিত করা স্বাস্থ্যনীতির অন্যতম লক্ষ্য। স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কে অজ্ঞতা, উদাসীনতা সুস্বাস্থ্য গঠনের প্রধান অন্তরায়।
উপযুক্ত শিক্ষা, সুস্বাস্থ্য সম্পর্কে ব্যাপক প্রচার, প্রভৃতি ব্যবস্থা এই অন্তরায় দূর করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। মনে রাখতে হবে যে প্রত্যেক ব্যক্তিই সমাজের একজন সদস্য। তাই শুধু ব্যক্তির কল্যাণ নয় সমাজের সর্বস্তরের জনগণের কল্যাণে স্বাস্থ্য বিজ্ঞান সম্বন্ধে সকলকে অবহিত করতে এবং স্বাস্থ্যনীতি মেনে চলতে উপদেশ দিতে হবে।

