Type Here to Get Search Results !

মানসিক স্বাস্থ্য ও অবসাদ কাকে বলে । মানসিক স্বাস্থ্য ও শিক্ষার্থীর জীবনে এর ভূমিকা গুলো কি কি?

মানসিক স্বাস্থ্য ও অবসাদ কাকে বলে । মানসিক স্বাস্থ্য ও শিক্ষার্থীর জীবনে এর ভূমিকা গুলো কি কি? নিযে বিস্তারিত বর্ননা দেওয়া হল।

মানসিক স্বাস্থ্য ও অবসাদ কাকে বলে বা মানসিক স্বাস্থ্য ও অবসাদ বলতে কি বুঝায়?

মানসিক স্বাস্থ্য ও অবসাদ সম্পর্কে আলােচনার আগে স্বাস্থ্য বলতে আমরা কী বুঝি তা জানা প্রয়ােজন। স্বাস্থ্য বলতে শারীরিক সুস্থতা বা শরীরের নীরােগ অবস্থাকে বুঝি। ব্যাপক অর্থে শারীরিক সুস্থতার সাথে মানসিক সুস্থতারও প্রয়ােজন। মানসিক সুস্থতা শারীরিক সুস্থতার উপর নির্ভরশীল। যে কোনাে কাজে আমরা নিযুক্ত থাকি না কেন শরীর সুস্থ না থাকলে কিছুই ভালাে লাগে না, কাজে উৎসাহ থাকে না, কর্মক্ষমতা হ্রাস পায়। মানুষের চাহিদা অনুযায়ী পরিবেশের সাথে সঙ্গতি বিধানের মাধ্যমে মানসিক সুস্থতা বজায় থাকে। অতএব, যে ব্যক্তি নিজের চাহিদা ও পরিবেশের সাথে সফলভাবে সঙ্গতি বিধান করতে পারে, সেই মানসিক দিক দিয়ে সুস্থ। একজন মানুষের ব্যক্তিসত্তার সাথে সামঞ্জস্যমূলক শারীরিক ও মানসিক ক্রিয়াকলাপকে ঐ ব্যক্তির মানসিক স্বাস্থ্য হিসেবে অভিহিত করা যায়। অতিরিক্ত কাজ বা পরিশ্রমের চাপে একজন সাধারণ মানুষ বা একজন খেলােয়াড়ের কর্মক্ষমতা সাময়িকভাবে হ্রাস পায়। আবার দীর্ঘক্ষণ একই কাজ করার ফলে সেই কাজের প্রতি মানুষের শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তন দেখা দেয়। ফলে ব্যক্তির কর্মক্ষমতার অবনতি হয়। ব্যক্তির মানসিক ও শারীরিক অবস্থার এই পরিবর্তনকেই ক্লান্তি বা অবসাদ বলা হয়।


মানসিক স্বাস্থ্য ও শিক্ষার্থীর জীবনে এর ভূমিকা

এই অধ্যায়ের শুরুতেই মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে আলােকপাত করা হয়েছে। সাধারণভাবে মানসিক স্বাস্থ্য বলতে- “Full and harmonious functioning of the whole personality"-কে বােঝায়। খেলাধুলা যেমন আমাদের শারীরিক সুস্থতা বজায় রাখে, তেমনিভাবে মানসিক স্বাস্থ্য আমাদের দেহ ও মনের ভারসাম্য রক্ষায় সহায়তা করে। দেহের কোনাে অঙ্গের ক্রিয়া সঠিকভাবে না হলে যেমন দৈহিক অসুস্থতা দেখা দেয়, তেমনি মানসিক প্রক্রিয়া সঠিকভাবে না হলে মানসিক অসুস্থতার সৃষ্টি হয়। ক্রীড়াক্ষেত্রে শিক্ষার্থীর জীবনে প্রতিযােগিতার মনােভাব বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে এই মানসিক অসুস্থতা প্রত্যক্ষ করা যায়। খেলাধুলা শুধুমাত্র শারীরিক কসরত নয়, এর সাথে জয়ের আনন্দ ও পরাজয়ের বেদনাও জড়িত থাকে। তবে যেহেতু একজন ক্রীড়াবিদ শারীরিকভাবে সুস্থ থাকে, সেজন্য তাকে মানসিকভাবেও সুস্থ থাকতে হয়। কারণ শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা একে অপরের পরিপূরক। একজন শিক্ষার্থী কোনাে খেলায় জয়লাভ করলে আনন্দিত হয়, পরবর্তীকালে আরও ভালাে করার জন্য তার মধ্যে আত্মবিশ্বাস গড়ে উঠে। আর তার এই সাফল্য ধরে রাখার জন্য সে প্রশিক্ষণের প্রতি আগ্রহী হয়ে বেশি বেশি সময় ব্যয় করে এবং পরিশ্রমী হয়। তবে এরূপ জয়ের ফলে তার মধ্যে নেতিবাচক মনােভাবও গড়ে উঠতে পারে। যেমন- প্রচণ্ড আত্মবিশ্বাস, নিজকে বড় করে দেখা কিংবা অপরের দক্ষতাকে ছােট করে দেখার প্রবণতার সৃষ্টি হতে পারে। সুতরাং বিজয়ী খেলােয়াড়দের মানসিকতার ভালাে বা খারাপ দু'ধরনের ফলাফল আসতে পারে।

আবার পরাজিত হলে হতাশার সৃষ্টি, অন্যের উপর দোষ চাপানাের চেষ্টা করতে পারে। অনেকে হতাশায় মানসিকভাবে ক্লান্ত হয়ে খেলাধুলা ছেড়ে দিতে পারে। জয়-পরাজয়ের এই স্বাভাবিক ঘটনাকে সহজভাবে নিতে না পারলে মানসিক চাপের সৃষ্টি হয় এবং তার কর্মকাণ্ডে নানা রকম অসঙ্গতি পরিলক্ষিত হয়। এক্ষেত্রে ক্রীড়া শিক্ষক বা প্রশিক্ষকদের বিজয়ী বা বিজিত খেলােয়াড়দের সাথে একত্রে কাজ করে তাদের মানসিক স্বাস্থ্য বা মানসিক ভারসাম্য বজায় রাখার সর্বাত্মক চেষ্টা করা প্রয়ােজন।

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.